২০২১ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে "ইসরাইল ছাড়া সব দেশে ভ্রমণ বৈধ"—এই বাক্যটি তুলে দিয়েছিল। এ নিয়ে সে সময় ব্যাপক সমালোচনা ওঠে, এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. কে. আব্দুল মোমেন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, "কেউ বাংলাদেশ থেকে ইসরাইলে গেলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"তবে ইসরাইল তখনও আশা করেছিল যে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাসপোর্টে আবারও সেই বাক্য ফিরিয়ে এনে ইসরাইলে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছে এবং ইসরাইলি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিরোধিতা জোরালোভাবে জানিয়েছে।ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম 'জেরুজালেম পোস্ট' ১৬ এপ্রিল এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যার শিরোনাম ছিল— "কূটনৈতিক সম্পর্কের আশা"। প্রতিবেদনে জাপানে নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত গিলাট কোহেনের ২০২১ সালের একটি পুরনো টুইট উদ্ধৃত করা হয়, যেখানে তিনি বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ইসরাইল নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়াকে "স্বাগত পদক্ষেপ" বলে অভিহিত করেছিলেন।
কোহেন তার টুইটে লিখেছিলেন,
"এটি একটি অসাধারণ সংবাদ। আমি আশা করি, ইসরাইল ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হলে উভয় দেশের জনগণ উপকৃত হবে।" তবে বাংলাদেশ এই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদনে ইসরাইলি কূটনীতিকদের হতাশাও ফুটে উঠেছে, যারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা দেখেছিলেন। বাংলাদেশের সরকার ও জনমত ইসরাইলের সঙ্গে কোনো ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্কের বিপক্ষে। ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশ সবসময় ইসরাইলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। পাসপোর্টে ইসরাইল নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল এই নীতিরই ধারাবাহিকতা। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ফিলিস্তিনি স্বাধীনতার পক্ষে এবং ইসরাইলের সঙ্গে কোনো কূটনৈতিক বা বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে আগ্রহী নয়। ইসরাইল গত কয়েক দশক ধরে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চালাচ্ছে। সম্প্রতি তারা সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মরক্কোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলো এখনও ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়নিবাংলাদেশের এই সিদ্ধান্ত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসরাইল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে তার অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করেছে। এটি ফিলিস্তিনিদের প্রতি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সমর্থনেরই প্রতিফলন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের এই নীতি আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে, যতক্ষণ না ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও ইসরাইলি দখলদারিত্বের অবসান হয়।সূত্র:https://youtu.be/QRHTkpWaUP0?si=pc0nL6PJH7b_TTau
সূত্র : দৈনিক জনকণ্ঠ প্রকাশিত: ১০:১৪, ১৮ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১০:১৬, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
Post a Comment