ইসরায়েলী আগ্রাসনের প্রতিবাদী মিছিলে হামলা যা জানা গেল

  


ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেনি এবং এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগ অবধি উক্ত কর্মসূচিতে জঙ্গি হামলা বা অন্য কোনভাবে নিহতের তথ্যও পাওয়া যায়নি বরং কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুকের উক্ত দাবির কতিপয় পোস্টে একটি ব্লগপোস্টের লিংক সূত্র হিসেবে দেওয়া হয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে sadhinnews247 নামের ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইনের এই সাইটটি একটি ভূঁইফোড় সাইট বলে প্রতীয়মান হয়। সাইটে “‘মার্চ ফর গাজা’ মিছিলে গুলির হামলা: নিহত ১৯, সরকার চেপে যেতে চাইছে ঘটনা?” শীর্ষক কথিত দাবির বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। 

কথিত এই সংবাদে দাবি করা হয়, “শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল প্রায় ১২টার দিকে রাজধানী ঢাকায় “মার্চ ফর গাজা” শীর্ষক প্রতিবাদী মিছিলে ঘটে এক নৃশংস গুলির হামলা। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত এবং অন্তত ৪৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শাহবাগ থেকে মিছিল শুরু হয়ে জাতীয় জাদুঘরের সামনের অংশে পৌঁছালে হঠাৎ অজ্ঞাত পরিচয় সশস্ত্র ব্যক্তিদের গুলির মুখে পড়ে মিছিলটি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা প্রথমে কিছু গুলি শব্দ শুনতে পান, এরপর চারপাশে ছুটোছুটি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একজন অংশগ্রহণকারী বলেন, “আমরা প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিচ্ছিলাম, হঠাৎ গুলি শুরু হলো। অনেকে পড়ে গেলেন, রক্ত everywhere… কেউ বুঝে ওঠার আগেই ১০-১৫ সেকেন্ডে সব শেষ।” ঘটনার পর পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়, “কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত বিশৃঙ্খলার” কারণে সাময়িক গোলযোগ হয়েছিল। এরপর থেকে অনেক সংবাদ মাধ্যম এই খবর প্রকাশ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবি দ্রুত মুছে ফেলা হয়েছে, এবং কিছু অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধও করা হয়েছে। সরকারি ভাষ্য এবং বাস্তব ঘটনার মধ্যে ফারাক নিয়েই সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন উঠছে। অনেকেই মনে করছেন, এই ঘটনা ইচ্ছাকৃতভাবে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। বিএনপি, ইসলামী দল এবং স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্বরা সরকারের বিরুদ্ধে “সত্য গোপনের” অভিযোগ এনেছে। তারা একটি স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানের তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। #WhoFiredAtGazaMarch এবং #JusticeForMarchers হ্যাশট্যাগে ছড়িয়ে পড়েছে হাজারো পোস্ট, ছবি ও ভিডিও।”

গতকাল (১২ এপ্রিল) ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে জঙ্গী হামলায় ১৯ জন নিহত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে উক্ত বিষয়ে দেশের গণমাধ্যমগুলোতে ঢালাওভাবে সংবাদ প্রচার হওয়ার কথা। তবে, দেশের কোনো গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার হতে দেখা যায়নি। 

এছাড়া, অন্য কোনো বিশ্বস্ত সূত্রেও আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, ‘মার্চ ফর গাজা’ মিছিলে জঙ্গি হামলায় ১৯ জন নিহত হয়েছে শীর্ষক তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

Post a Comment

Previous Post Next Post