Top News

কুমিল্লায় ভয়বহ সংঘর্ষ পাল্টা পাল্টি হামলা

 


ছয় দফা দাবিতে কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে টানা তিন ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এতে উভয় পাশে প্রায় ২০ কিলোমিটার জুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে সেনাবাহিনী ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে আন্দোলনকারীরা ইটপাটকেল ছুড়লে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে অন্তত ১০-১২ জন শিক্ষার্থী আহত হন।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে কুমিল্লার কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকায় এ অবরোধ শুরু হয়। এতে কুমিল্লা পলিটেকনিক ছাড়াও জেলার বিভিন্ন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, একাধিকবার দাবি জানালেও কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করেনি। তাই বাধ্য হয়েই তারা রাস্তায় নেমেছেন।

অবরোধ চলাকালে দীর্ঘ যানজটে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। হাইওয়ে পুলিশ ও থানা পুলিশ শিক্ষার্থীদের সরাতে ব্যর্থ হলে পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে সেনাবাহিনী ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে আন্দোলনকারীরা ইটপাটকেল ছুড়লে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে অন্তত ১০-১২ জন শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাৎক্ষণিক আহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। 

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি হলো :

১. হাইকোর্টে দাখিল করা ‘অবৈধ’ পদোন্নতির রায় বাতিল করতে হবে

২. ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবির পরিবর্তন এবং সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে।

৩. ২০২১ সালে নিয়োগ পাওয়া ‘রাতের আঁধারের’ নিয়োগ বাতিল করতে হবে এবং বিতর্কিত নিয়োগবিধি সংশোধন করতে হবে।

৪. ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে বয়সসীমাহীন ভর্তি বাতিল করে আন্তর্জাতিক মানের চার বছর মেয়াদি ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষাক্রম চালু করতে হবে।

৫. ১০ম গ্রেডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদের জন্য ডিপ্লোমা পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত কোটা কার্যকর করতে হবে।

৬. সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের নিচের পদে নিয়োগ বন্ধ করতে হবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী সালেহ আকরাম বলেন, ‘বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমাদের এই আন্দোলন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। কেউ কথা বলতে চাইলে তাদেরই আসতে হবে, আমরা আর সচিবালয়ে যাব না।’

ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা অবরোধ তুলতে রাজি হয়নি। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।’

সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল মালিক বলেন, ‘চারদিকে সড়ক বন্ধ ছিল। যান চলাচল পুরোপুরি থেমে যায়। শিক্ষার্থীরা সরে গেলে ধীরে ধীরে সড়ক সচল হতে শুরু করে।’

সদর দক্ষিণ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ রেফাঈদ আবিদ বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দল পাঠাতে বলেছিলাম, যেন তাদের দাবি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে পৌঁছাতে পারি। কিন্তু তারা তাতে রাজি হয়নি।’

পুলিশ জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ঊর্ধ্বতন প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post