পদত্যাগের হিড়িক দেশবাসীর জন্য যে বার্তা দিল

 


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাঁদপুর জেলা আহবায়ক কমিটি ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে। এরমধ্যে অনেকেই ফেসবুকে তাদের পদত্যাগের বিষয়টি তুলে ধরেন।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক হাসানাত আব্দুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেল স্বাক্ষরিত এ আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ২৩০ জনের ঘোষণার পরেই ঐ কমিটি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন ১৬০ জন। পরে রাত সাড়ে ১০ টায় কেন্দ্রের কাছে কমিটি প্রকাশের জবাবদিহিতা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র প্রতিনিধি মোজাম্মেল হোসেন বলেন, চাঁদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগের রাখার পরও যেভাবে কমিটি দেওয়া হয়েছে তা আমাদের জানানো হয়নি। এবং রাজপথে থেকে যারা আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছে তাদেরকেও প্রাধান্য দেওয়া হয়নি। তাই এই কমিটি বিতর্কিত হয়েছে। আমরা এই কমিটিকে বয়কট এবং অবাঞ্চিত ঘোষণা করলাম।

তিনি বলেন, ২৪ এর আন্দোলনে শহীদ ও আহতরা যেই মাইন্ডেডে আন্দোলন করেছে এই কমিটি সম্পন্ন তাদের মাইন্ডেডের বিরুদ্ধে অবস্থান করেছে। এই কমিটিকে বয়কট ও অবাঞ্চিত ঘোষণা করার ক্ষেত্রে আন্দোলনে যেসব মূল যোদ্ধারা ছিল তাদের উপেক্ষা করা হয়েছে। বিশেষ করে উপজেলার নেতৃত্ব স্থানগুলোতে সম্পন্ন বৈষম্য করা হয়েছে। এই কমিটি প্রকাশের পর জেলা ও উপজেলার ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সাথে একটি কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়াও ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই ২১৩ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটির মধ্যে প্রায় ১৬০ জন পদত্যাগ করেছে। এবং যারা পদত্যাগ করেছেন তাদের মধ্যে অনেকেই জানতেন না এই কমিটিতে কিভাবে তাদের নাম আসে, বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, শুধু এই কমিটিকে বয়কট কারি বিবেচনা করে নতুন কমিটি দিলেই হবে না,কেন্দ্র আমাদের কাছে এই কমিটি নিয়ে জবাবদিহিতা করতে হবে।

সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাকিব হোসেন নামের আরেকজন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাঁদপুর জেলা কমিটি ঘোষণার লক্ষ্যে কেন্দ্র যেই আলোচনা করেছে। সেখানে যেই কথাগুলো বলেছে বাস্তবে সেই কথা তারা রাখেনি। এই কমিটির মাধ্যমে জেলা ও উপজেলার মধ্যে বিভক্ত করে বৈষম্যের সংগঠনকে ধ্বংস করার জন্য একটি কুচক্রী মহল কাজ করছে। আমরা চাইনা কারো কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠনটি প্রশ্নবিদ্ধ হোক। তাই আমরা চাই সবার মতের ভিত্তিতে এই কমিটির ঘটন করা হোক। আমরা চাই না আমি-ডামির মাধ্যমে এই কমিটি হোক। আমি-ডামির মাধ্যমে এই কমিটি করা হলে চাঁদপুর জেলা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে তেমন জেলার ৮ টি উপজেলা ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই আমরা কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ জানাবো অনতিবিলম্বে এই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে সবার সাথে আলোচনার মাধ্যমে কমিটি দেওয়া হোক।

সাগর হোসেন নামের শিক্ষার্থী বলেন, কেন্দ্রের সাথে বৈঠকের পর আমরা সুন্দরভাবে তাদেরকে বলেছি একটি সু-শৃঙ্খল কমিটি প্রকাশ করার জন্য। কিন্তু তারা আমাদের কথাতো রাখলই না বরং একটি অনৈতিক কমিটি প্রকাশ করেছে।

আহবায়ক কমিটি থেকে এখন পদত্যাগ করেন কমিটির সহ মুখপাত্র সায়েম আহমেদ, যুগ্ম-সচিব জান্নাতুল ফেরদৌস জবা, সংগঠন হীরা কাজুনারি, আম্মার শেখ ও আইরিন আক্তার সহ প্রায় ১৬০ জন।

এদিকে বুধবার রাতেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চাঁদপুরের যে কমিটি ঘোষণা করা হয়, তা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় পেইজ থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

সূত্র :-সময়ের কন্ঠস্বর প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৩ এএম

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post