আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারের ধারাবাহিকতায় এবার গ্রেপ্তার হয়েছেন হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
সোমবার গভীর রাতে ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মাহমুদুন্নবী।
তবে সুনির্দিষ্ট কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এ বিষয়ে নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।৫ অগাস্টের আগে-পরে সরকারের যে কয়েকজন এমপি-মন্ত্রী দেশ ছাড়ার খবর বেরিয়েছিল- এর মধ্যে ব্যারিস্টার সুমনের নামও ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার পতনের প্রায় আড়াই মাস পর তাকে গ্রেপ্তারের কথা জানাল পুলিশ।
এদিকে ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন হামলা ও অগ্নিকাণ্ডে মিরপুর মডেল থানা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সুমনকে রাখা হয় পল্লবী থানায়।
পল্লবী থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, “সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমনকে গ্রেপ্তার করে পল্লবী থানায় রেখেছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ।"এর আগে রাতে ফেইসবুকে পোস্ট দেন ব্যারিস্টার সুমন।
তিনি লেখেন, "আমি পুলিশের সাথে যাচ্ছি। দেখা হবে আদালতে। দোয়া করবেন সবাই।"
এই পোস্টে জুড়ে দেওয়া এক ভিডিওতে তিনি দাবি করেছেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সুযোগ থাকার পরও অনেকের মতো তিনি দেশত্যাগ করেননি।
“আমি দেশেই আছি, ঢাকা শহরেই আছি। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে আমি নিজের অবস্থান একটু গোপন রেখেছি।"
সুমন বলেন, “দেশ সংস্কারে কাজ করার সুযোগ পেলে আমি কাজ করব। সংস্কারের অংশ হিসেবে এখন যাদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে, এরকম অনেকের বিরুদ্ধে আমি মামলা করেছিলাম। এর শুরুটা আমিই করেছিলাম।"
সংসদ সদস্য হিসেবে পাওয়া স্বল্প সময়কে দেশের মানুষের কল্যাণে ব্যয় করেছেন বলে দাবি করেন ব্যারিস্টার সুমন।
তিনি এও বলেন, রাজনৈতিক ক্ষমতাকে ব্যবহার করে অনৈতিক কোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়া কিংবা অবৈধ সম্পদ গড়েননি।
“আমার নামে কোনো মামলা হলে আমি যেহেতু আইনজীবী, তাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধা আমার আছে। আমি আইনের মাধ্যমেই আমি সেটি মোকাবেলা করব।"
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলা) আসন থেকে সুমন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
আওয়ামী লীগের ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী মো. মাহবুব আলীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সুমন প্রায় এক লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছিলেন নির্বাচনে।
সোশাল মিডিয়ায় বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক বিষয়ে পোস্ট ও লাইভ করে আলোচনায় আসা ব্যারিস্টার সুমন এ বছরের শুরুর দিকে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ‘অবৈধ সম্পদ’ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করেন।
এর আগে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহসভাপতি সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশান-২ এর বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি বলে অভিযোগ করে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করেন এই আইনজীবী।
গণ আন্দোলনের মুখে ৫ অগাস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। তিন দিন পর গঠনের পর একে একে গ্রেপ্তার হচ্ছেন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও প্রভাবশালী সংসদ সদস্যরা।সূত্র:- bdnews24
Post a Comment