ছাত্রদের নতুন সংগঠন থেকে ৩ জনের পদত্যাগ

 


জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের নিয়ে গঠিত গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন সমন্বয়ক রিফাত রশীদ। এবার নতুন এ সংগঠনের কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদ পাওয়া দুই প্রতিনিধি। 

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত আটটার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে তারা এ ঘোষণা দেন। কমিটিতে ঢাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক আধিপত্যের প্রতিবাদে তারা এ পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

পদত্যাগ করা দুই নেতা হলেন-সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী সজীব ও যুগ্ম সদস্যসচিব সালাহউদ্দিন আম্মার। তারা দুজনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করে নতুন ছাত্রসংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদারকে আহ্বায়ক ও দফতর সম্পাদক জাহিদ আহসানকে সদস্যসচিব করে প্রাথমিকভাবে ছয় সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করে ২০৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার। এতে ৬ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে মেহেদী সজীব ও ১ নম্বর যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে সালাহউদ্দিন আম্মারের নাম ঘোষণা করেন তিনি। নাম ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই দুই সমন্বয়ক।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে মেহেদী সজীব লেখেন, ‘আজ বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে আমার নাম বলা হয়েছে। গতকাল রাতেও এ নিয়ে আমি আমার স্ট্যান্ড ক্লিয়ার করেছি। এখনো বলছি, নতুন বন্দোবস্তের নামে ঢাকা ও ঢাবিকেন্দ্রিক নয়া ফ্যাসিবাদী মনোভাবের যে উত্থান লক্ষ করা যাচ্ছে, তার প্রতিবাদেই আমি এই প্ল্যাটফর্মে থাকতে রাজি নই।’

ইচ্ছার বাইরে তাকে সংগঠনে সম্পৃক্ত করার নিন্দা জানিয়ে মেহেদী সজীব আরও লেখেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যই তিনি আজ মেহেদী সজীব হিসেবে গড়ে উঠতে পেরেছেন। তার স্পষ্ট বার্তা, ঢাকা ও ঢাবিকেন্দ্রিক ফ্যাসিবাদী মনোভাব থেকে যত দিন না এই দলের অংশীজনেরা বেরিয়ে আসতে পারবেন, বিকেন্দ্রীকরণের দিকে মনোনিবেশ করবেন, তত দিন পর্যন্ত তিনি তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বোঝাপড়ায় যাবেন না। এ জন্য তিনি ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে সালাহউদ্দিন আম্মার লিখেছেন, ‘আমাদের কাছে শিক্ষার্থীদের পালসটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রাবি শিক্ষার্থীরা চাচ্ছে না এই ঢাবি আধিপত্যের পক্ষে থাকতে, তাই আমরাও চাচ্ছি না। শিক্ষার্থীরা না চাইলে আমরা কিছুই নই।’

পদত্যাগের বিষয়ে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, নতুন ছাত্রসংগঠনটি সার্বজনীন হতে পারত। কিন্তু তাদের বর্তমান অবস্থানের কারণে সংগঠনটির প্রতি শিক্ষার্থীরা বিশ্বাস রাখতে পারছেন না। জুলাই অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় শক্তি ছিলেন শিক্ষার্থীরা। সেই শিক্ষার্থীদের অনুভূতির বাইরে গিয়ে তার রাজনীতি করা সম্ভব নয়।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post